Arsenic Album - আর্সেনিক এলবাম



Arsenic Album -  আর্সেনিক এলবাম


 

আর্সেনিকের প্রতিশব্দ:-
                     এসিডাম আর্সেনিকাম
                     আর্সেনিকাম
                     সাদা আর্সেনিক
                     আর্সেনিকাম এসিড
                     আর্সেনিক ব্লেন্স
                     আর্সেনিক ট্রায় অক্সাইড

আর্সেনিকের উৎস:-
সেঁকো বিষ হইতে এই ঔষধ প্রস্তুত হয়। আর্সেনিকের ধাতব পদার্থ ঝলসাইয়া আর্সেনিক এলবাম পাওয়া যায় ।
ইহা সাদা ভারী বিচূর্ণ পদার্থ রুপ লাভ করে অথবা ছোট বড় পিন্ড যে অবস্থাতেই থাকে তাহা কাঁচ ভাঙ্গার মত প্রতীয়মান হয় ।
ইহা একটি তীব্র বিষাক্ত পদার্থ ।

ক্রিয়াস্থান :- প্রায় সমস্ত শরিলে আর্সেনিকের বিশেষ ক্রিয়া দর্শে । বিশেষতঃ স্নায়ুমন্ডল, চর্ম, শ্লৈম্মিক ঝিল্লী, মূত্রযন্ত্র,
হৃদপিন্ড ও পাকস্থলীর উপর ইহার প্রাধান ক্রিয়া ।

আর্সেনিকের বিশেষ লক্ষন:-
                     ১/ মৃত্যুভয়
                     ২/ ছটফটানি ও এপাশ ওপাশ করা
                     ৩/ সর্ব্বাঙ্গে আগুনে ফোড়ার মত জ্বালা কিন্তু গরমে উপসম
                     ৪/ রাত্রি ও দিন দ্বি -প্রহরের পরে পীড়া বৃদ্ধি
                     ৫/ নাসিকা দিয়া জলের মত গরম সর্দ্দি
                     ৬/ চিৎ হইয়া শুইতে অক্ষমতা 
                    ৭/ সন্ধেহ প্ররায়ন 

শিশুদের বিষেশ লক্ষ:-
                     রাত্রে ঘুমের মধ্যে কথা বলে, অল্পতে রাগ করে ও চটিয়া উঠে ।

আর্সেনিকের মানসিক লক্ষন:-
মানসিক উৎকন্ঠা ও অস্থিরতা, রোগী সব সময় স্থান পরিবর্তন করে। একাকী থাকিতে ভয় পায় ।
মৃত্যুভয়, আত্নহত্যার প্রবৃত্তি, হতাশার জন্য রোগী একস্থান হইতে অন্য স্থানে চলিয়া যায় ।
ইহার রোগী কৃপণ, হিংসুটে, স্বার্থপর এবং ভীরু ।
অগোছাল ভাব এবং বিশৃঙ্খলা দেখিলে রোগী বিরক্ত হয় ।
কাল্পনিক গন্ধ পায় এবং কাল্পনিক দৃশ্য দেখে ।
পানির পিপাসা অত্যান্ত কিন্তু অল্প অল্প পানি পান করে। 

আর্সেনিকের চরিত্রগত লক্ষন:-
শীঘ্র শীঘ্র শীর্ণতা প্রাপ্তি, একপ্রকার বিশেষ পিপাসা, অস্থিরতা, মধ্যরাত্রের পর রোগ বৃদ্ধি, জ্বালা ।
রোগী অনাবরত ছটফট করে ।
ঠান্ডা লাগা হেতু বেদনা বৃদ্ধি গরমে আরামবোধ ।
বার বার ঠান্ডা পানি পান করিতে ইচ্ছা, মৃত্যুভয় সবচেয়ে বেশী ।
পাকাশয়ে জ্বালা, শীতল ঘর্ম (ঘাম) – তৎসহ অবসাদ ।
শয়ন করিতে কষ্ট – মনে হয় যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হইয়া যাইবে ।
হাঁপানী বা উদরীতে শুইলেই টান এবং তাহার বৃদ্ধি ।
বরফ, জল প্রভৃতি আহার করার ফলে অর্জীন ও উদারময় ।
নাক দিয়ে জলের ন্যায় সর্দি নিগমন। নাক বন্ধ সর্দিতে নাক প্রায় হাজিয়া যায় ।
ক্ষত উত্তাপে উপসম ।
ঘন হলুদবর্নের শ্বেতপ্রদার – জননেন্দ্রিয়ের যেখানে লাগে সেখানে হাজিয়া যায় ।

আর্সেনিকের প্রয়োগ ক্ষেত্র :-
অস্থিরতা, দুর্বলতা, অতিশয় জ্বালা, পিপাসা, কলেরা, জ্বরপীড়া, টাইফয়েড, উদারাময়, আমাশায়, চক্ষুপীড়া, সর্দিকাশি, হাচি, হাঁপানী, হৃৎপিন্ডের পীড়া, শোথ, চর্মপীড়া, অর্শ ক্ষত, ডিম্বকোষের পীড়া, রজঃস্রাব, এলবুমেনুরিয়া, মৃগী ও মুর্ছা প্রভৃতি পীড়ায় ইহা প্ররয়োগ হয় । 
আর্সেনিকের পিপাসা:- আর্সেনিকের পিপাসা প্রবল কিন্তু একসাথে অনেক জলপান করেনা, সামান্য সামান্য জলপান করে ।
অনেক সময় জলপান করা মাত্রই বমি হইয়া যায় ।
পুরাতন পিড়ায় আর্সেনিকে পিপাসা থাকেনা । 

আর্সেনিকের জ্বালার একটি বিশেষত্ব:-
গরমে, উত্তাপ প্রয়োগে, গরম ঘরে জ্বালার উপশম এবং ঠান্ডায় জ্বালার বৃদ্ধি। রোগী সেজন্য কাপড় খুলিতে চায়না।
পাকস্থলীর পীড়া, ক্যান্সার, ক্ষত, পুরাতন পীড়া, গর্ভাবস্থায় বমি প্রভৃতির সহিত যদি ছটপটানি ও জ্বালা থাকে তাহলে আর্সেনিক।
তরুন রোগের জ্বালায় আর্সেনিক ও পুরাতন রোগের জ্বালায় সালফার।

উদরাময় লক্ষন:-
ফলমূল, বরফ কিংবা অন্য শীতল দ্রব্য পান করিয়া পীড়া হইলে আর্স উপকারী । রোগীর পেটে অসহনীয় বেদনা হয় ।
বাহ্য সবুজ, হলদে, কালছে জলের মত এবং রক্তাক্ত, পরিমানে এত বেশী হয় না ।
বাহ্যে অত্যন্ত পঁচা, দুর্গন্ধ, তৎসহ গাত্রদাহ, ছটফটানি, পিপাসা এবং পান মাত্র পেটে অসহনীয় বেদানা ।
বমি জলের মত, রক্ত মিশ্রিত অথবা লালবর্ণের । রাত দুপুরে রোগের বৃদ্ধি এবং উত্তাপে বেদনার উপশম ।

আমাশয়ে লক্ষন :-
মুখে বিস্বাদ, ক্ষুধাহীনতা, আহারান্তে হিক্কা ।
খাদ্য দ্রব্য পাকাশয়ে পৌছামাত্র বমন ।
বারবার অল্প অল্প জল পান, প্রবল পিপাসা, পাকাশয়ে জ্বালা ।
পাকাশয় স্পর্স করিলে বেদনানুভব ।

চক্ষু পীড়া লক্ষ:-
চক্ষুর পাতা ফোলা, যন্ত্রণা, সেঁক দিলে যন্ত্রণা কমে ।
চক্ষু হইতে যে গরম জল নির্গত হয় তাহা তীক্ষ্ন স্বাদযুক্ত ।
চক্ষুর ভয়ানক জ্বালা ও যন্ত্রণা থাকে ।
চক্ষুর পাতা লাল, ক্ষতগ্রস্ত, মামড়ি পড়ে ।
আলোতে তাকাতে পারেনা ।

সর্দি কাশি লক্ষ:-
নাক দিয়া জলের মত পাতলা স্রাব নিঃসারিত হয় ।
নাসাপথ সর্বদা অবরুদ্ধ, কপালে দপদপ করে, মৃদু শিরঃপীড়া ও হাঁচি, হাঁচি আর্সের প্রধান লক্ষন ।
গরম ও জ্বালাজনক স্রাব। যেখানে লাগে হাজিয়া যায় ।
রোগী দুই প্রহর রাত্রির পর শয়ন করিতে পারে না ।
রোগী ঘন ঘন কাশিতে থাকে, শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হয়, ইহাতে শ্বাসনালী শুষ্ক থাকে ।

শোথ  লক্ষ:-
হৃৎপিন্ড, লিভার বা কিডনীর পীড়া হেতু শোথ ।
প্রথমে চক্ষু ও পায়ে এবং অবশেষে সর্বশরীরে শোথ জম্মে ।
রোগীর অতিশয় শ্বাসকষ্ট উৎপন্ন হয় ।
দুপুর ও রাত্রিতে শ্বাসকষ্ট উপস্থিত হয় ।
অতিশয় পিপাসা থাকে কিন্তু অল্প অল্প জল পান করে ।
ফোলা পায়ে ঘা হইলে সেই ঘা থেকে অনবরত রস পড়িতে থাকে ।

চর্মপীড়া  লক্ষ:-
শুস্ক একজিমা, চর্মরোগে চর্মের উপর শক্ত টিবলীর মত ফুলিয়া থাকে ।
চর্মপীড়ায় প্রায়ই দুর্গন্ধ থাকে, মাথা হইতে কপাল পর্যন্ত প্রায়ই এই একজিমা বিস্তৃত হইয়া পড়ে ।
চুলকানোর পর অসহ্য জ্বালা থাকে ।
শীতল জলে চুলকানি বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়, কিন্তু গরমে চুলকানির উপসম ঘটে ।

আর্সেনিকের বৃদ্ধি কখন :-
আক্রান্ত পার্শ্বে শয়ন করিলে, বেলা ১ টা হইতে ২ টার মধ্যে, রাত্রি দ্বিতীয় প্রহরের পরে, ঠান্ডায় এবং শীতল বস্তু পানাহারে ।

আর্সেনিকের উপশম কখন :- মস্তক উঁচু করিয়া শয়নে ও সঞ্চালনে ।

আর্সেনিকের পরবর্তী ঔষধ :- ক্যামোমিলা, ক্যাল্ক ফস, আর্নিকা, বেলেডোনা, সাইকিউটা, থুজা, ফসফরাস, এপিস, নেট্রাম, সালফ, লইকো, ল্যাকেসিস ।

আর্সেনিকের ক্রিয়ানাশক ঔষধ :- নাক্স ভম, ওপিয়ম. নাক্স মস্কেট, সালফার, চিনিনাম সলফ, ক্যাম্ফার, গ্রাফাইটিস, ট্যাবেকাম, ভিরেট্রাম, চায়না, ইপিকাক, হিপার, আয়োডিন, মার্কুরিয়াস।

আর্সেনিকের মায়াজমের নাম :-
                     অ্যান্টিসোরিক
                     অ্যান্টিসাইকোটিক
                     অ্যান্টিসিফিলিটিক
                     অ্যান্টিটিউবার কিউলার ।
আর্সেনিকের ক্রিয়া স্থিতিকাল :- ৬০ দিন হইতে ৯০ দিন ।

আর্সেনিকের ব্যবহার শক্তি :- ২ x হইতে সি এম শত্তি । পাকস্থলী, অন্ত্র, কিডনী পীড়ায় নিম্ম শক্তি এবং অন্যান্য পীড়ায় উচ্চশক্তি ব্যবহার্য ।  

২টি মন্তব্য:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.