Alumina – এলুমিনা
Alumina – এলুমিনা
বর্ণনা : এলুমিনাম হাইডোসাইড নামক একপ্রকার গন্ধ বিহীন মিহি গুড়া।
জলে ঢালিয়া দিলে আঠার মত পদার্থ সৃষ্টি হয়।
উৎস : এমোনিয়া এলুম এবং এমোনিয়ার দ্রবণের রাসায়নিক পদ্ধতিতে ইহা
প্রস্তুত হইয়া থাকে।
আবিষ্কার : ডাঃ হ্যানিমান নিজেই আবিষ্কার করেন।
ক্রিয়াস্থান : স্নায়ুমন্ডল, মস্তিষ্ক, মেরুদন্ড, চর্ম, কোষ্ঠবন্ধতা, রক্তস্রাব, কাশি ও স্ত্রীলোকদের পীড়ায়।
ধাতু : যে সকল রোগী বহু দিন যাবত পুরাতন পীড়ায় কষ্ট পাইতেছে এবং যে
সকল শিশু কৃত্রিম পানাহারে দ্ধারা প্রতিপালিত তাহাদের পীড়ায় ব্যবহৃত হয়। ইহার রোগী
সাধারণতঃ কোচকানো চর্ম, ক্ষীণদেহ
নারী।
প্রয়োগক্ষেত্র : চর্ম ও শ্লৈম্মিক ঝিল্লীর শুষ্কতা, পেশী সমূহের পক্ষাঘাত, কোষ্ঠবন্ধতা, প্রস্রাবের
পীড়া, শুক্র
স্খলন, প্রমেহ, স্ত্রীপীড়া, শ্বাস
পীড়া, গলনালীর
পীড়া, চক্ষু, নাসিকা ও কর্ণের পীড়া।
মানসিক লক্ষণ :
১. রোগী
কোন সিদ্ধান্তেই পৌছিতে পারেনা। যে জিনিস গুলি তাহার নিকট জানা ছিল সেগুলি তাহার
নিকট কোন প্রয়োজন নেই বলিয়া বোধ হয়।
২. চিন্তা
শক্তির বিশৃংখল অবন্থা।
৩. মনে
হয় যেন সবকিছু দেরীতে হইতেছে। সময় যেন অতি ধীরে কাটে। এক ঘন্টার সময় এক দিন মনে
হয়।
৪. কোন
ধারাল অস্ত্র রক্ত দেখিলে কাঁপিতে থাকে এবং আত্নহত্যা করার প্রবৃত্তি জাগে।
৫. মনের
বিশৃংখলার জন্য রোগী মনে করে যেন সে পাগল হইয়া যাইতেছে।
৬. রোগী
খুবই দুঃখিত, কাতর, খিটখিটে। নানা প্রকার কল্পনা করে।
৭. প্রাতে
ঘুম ভাঙ্গিবার পর অধিকাংশ লক্ষণ প্রকাশ পায়। নিদ্রা ভঙ্গের পর ক্রন্দন। সময়ে সময়ে
স্থির ও শান্ত পরক্ষণে ভীতি ও শংকাগ্রস্ত।
৮. সব
ব্যাপারে তাড়াতাড়ি ভাবে।
চরিত্রগত লক্ষণ :
১. অত্যান্ত
কোষ্টবন্ধতা। বাহ্যের সময় জোরে বেগ দিলে শক্ত ও গাঁট আমমিশ্রিত বাহ্য হয়।
সরলান্ত্রের ক্রিয়াহীনতা হেতু নরম হইলেও অনেক জোরে কোঁথ পাড়িতে হয়।
২. চক্ষু
বুজাইয়া চলিতে বলিলে অদৌ চলিতে পারে না, হোঁচট
খায়, পড়িয়া
যায়।
৩. বহুদিন
হইতে পুরাতন ঢেকুর উঠে, সন্ধ্যায়
বৃদ্ধি।
৪. শ্বেত-প্রদরস্রাব পরিমাণে থুব বেশী, পা বাহিয়া গোড়ালীতে পড়ে।
৫. ঋতুস্রাবের
পর শারীরিক ও মানসিক ভীষণ দুর্বলতা, এমন
কি কথা কহিতেও অক্ষম।
৬. গায়ের
চামড়া শুষ্ক খসখসে, ঘাম
হয় না (ক্যালকেরিয়ার বিপরীত)।
৭. শরীরের
স্বাভাবিক তাপের হ্রাস, দুর্বলতা
বশতঃ অল্প বয়সে বৃদ্ধ হইয়া পড়ে।
৮. শ্বেতসার
জাতীয় খাদ্য, মাটি, কয়লা, লবণ, চা, খড়ি, কফি, টক
দ্রব্য এবং যাহা অতি সহজে হজম হওয়ার কথা নয় তাহাই খায়।
৯. হলুদ, মুরিচ এবং লবণ খাইলে কাশি বাড়ে।
১০. বাহ্যের
সময় বেগ না দিলে প্রস্রাব হয় না। যখনই প্রস্রাব ত্যাগ করিতে যায় তখনই বাহ্য হইবার
উপক্রম হইয়া থাকে।
১১. সামান্যতেই
মাথায় ঠান্ডা লাগে।
১২. চক্ষু
ঝাপসা, যেন
কুয়াশার মধ্যে আছে এমনটি দেখে।
১৩. পতিদিন
প্রাতঃকালে থাকিয়া থাকিয়া অল্প অল্প শুষ্ক কাশি হয়। একটু সাদা শ্লেষ্মা উঠিয়া গেলে
কাশি কমিয়া যায়।
কোষ্ঠবন্ধ ও উদরাময় :
অত্যন্ত কোষ্ঠকাঠিন্য, মল
যেন পাথরের ন্যায় কাঠিন, কখনো
কখনো এক সাপ্তাহে কাল পর্যন্ত মলত্যাগের বেগ বা কোনও ইচ্ছা থাকে না, বাহ্যের সময় অত্যন্ত বেগ দিতে হয়। তরল মল হইলেও জোরে বেহ না
দিলে সহজে বাহ্যে হয় না। বাহ্যের মত প্রস্রাবও ঔরুপ বেগ দিতে হয়। পেটে
অধিক পরিমাণে মল না জমিলে মলত্যাগের ইচ্ছা বা ক্ষমতা একেবারে থাকে
না।
কাশি :
আলজিব বাড়াজনিত কাশি ও প্রাতঃকালীন শুষ্ক কাশি এবং অনেক
কষ্টে একটু শ্লেষ্মা উঠিয়া যদি কাশির উপশম হয় ইহাতে বিশেষ উপকার হয়।
স্ত্রী-ব্যাধি :
রোগিনী অত্যন্ত দুর্ব্বল, চেহারা
ফেকাসে ও রক্তহীন, আদৌ
পরিশ্রম করিতে পারে না, রজঃস্রাব
অত্যান্ত বিলম্বে হয়, তাহাও
অত্যন্ত অল্প ও রক্তে রং লাল নহে,
কেবলমাত্র
একটু ফিকে রং গোলা জলের মত দেখায়।
শ্বেত-প্রদরস্রাব :
শ্বেত-প্রদরস্রাব সাদা বা হলদে ও চটচটে, উহা পরিমাণে এত বেশী হয় যে পাছা বাহিয়া পায়ের
গোড়ালিতে গড়াইয়া আসে।
রুচি :
এলিউমিনার রোগীর রুচি অত্যন্ত আশ্চর্য্যজনক, তাহারা দেওয়ালের বালী, চুণকাম, শ্লেটগুড়া, চা-খড়ি, পাতা, ভাতের
ফেণ, চাউল, নেকড়া, কাপড়ছেঁড়া
ইত্যাদি খায় বা খাইতে ইচ্ছা করে। চা, কফি, টক বস্তু ভালবাসে। আলু খাইলে রোগ বৃদ্ধি হয়।
চক্ষুপীড়া :
ঝাপসা
দৃষ্টি, যেন
কুয়াশার মধ্য দিয়া দেখিতেছে,
পাতা
ঝুলিয়া পড়ে, রোগী
মনে করে তাহার চক্ষুর সম্মুখে চুল বা পালক রহিয়াছে, তজ্জন্য
ক্রমাগত চক্ষু রহড়ায়। সমস্ত কিছু হলদে দেখতে পায়। চক্ষুর পাতায় ছোট ছোট ফুষ্কুড়ি।
সর্দ্দি :
পুরাতন সর্দ্দি স্রাব, নাসিকার
ভিতর শুষ্ক, ফোঁপাইলে
শক্ত শ্লেষ্মা বাহির হয়, নাসিকার
গোড়ায় বেদনা, যেন
ক্ষত হইয়াছে। নাসিকার ডগা লালবর্ণ দেখায়, কোনও
জিনিসের গন্ধ পায় না।
কর্ণের পীড়া :
কর্ণের ভিতর গুন গুন, সোঁ
সোঁ, ঠিক
গর্জ্জন করার মত একপ্রকার শব্দ হয়, হাঁ
করলে কানের ভিতর চিড়িক মারিয়া উঠে।
গলনালীর পীড়া :
আলজিব বাড়া ও গলনালীর ক্ষত, গিলিবার
সময় মনে হয় গলার মধ্যে ফুলিয়া যেন কি একটা আটকাইয়া রহিয়াছে। শুষ্কভাব, কোষ্ঠবন্ধ এবং বাহ্যে ও প্রস্রাবের সঙ্গে বেগ
দিতে হয়।
চর্ম্মপীড়া :
চর্ম্ম শুষ্ক, খসখসে, অপরিষ্কার, ভয়ানক
চুলকানি, যে
পর্যন্ত না রক্ত বাহির হয় সে পর্যন্ত চুলকাইতে থাকে, বিছানার
গরমে বা সামান্য একটুমাত্র গরমে থাকিলে সমস্ত শরীরে চুলকানি আরম্ভ হয়। চর্ম্মরোগ
সহ কোষ্ঠবন্ধ।
পুংজননেন্দ্রিয় :
পুংজননেন্দ্রিয় দুর্বলতা, ধ্বজভঙ্গ
ও স্বপ্নদোষ। সঙ্গম প্রবৃত্তি কমিয়া যায় এবং সময়ে সময়ে একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।
মলত্যাগকালীন কোঁথ দিবার সময় শুক্রক্ষরণ, তহার
জন্য ধ্বজভঙ্গের লক্ষণ । ইহার
অপব্যবহার ও অতি ব্যবহার জনিত জননেন্দ্রিয় দুর্বল হইয়া পড়ে।
বৃদ্ধি :
শীতকালে,
শীতল
বায়ূতে, আমবস্যা
ও পূর্ণিমায় এবং শ্বেতসার জাতীয় খাদ্যে, ঋতুস্রাবের
পর, বিছানার
গরমে, নিদ্রার
পর।
হ্রাস : গ্রীষ্মকালে, চুপচাপ
থাকিলে।
সম্বন্ধযুক্ত ঔষধ :
বৃদ্ধদের পীড়ায় – কোনিয়াম, আর্জ্জেন্ট ও ব্যারাইটা।
পীড়া তরুন অবস্থায় – ব্রায়োনিয়া।
পুরাতন অবস্থায় – এলুমিনা।
অনুপুরক :
ব্রায়োনিয়া, আর্জ্জেন্ট
মেট।
ক্রিয়ানাশক :
ইপিকাক,
ক্যামোমিলা, ক্যাষ্ফার।
ব্যবহার ক্রম :
৬, ৩০, ২০০ শক্তি।
ক্রিয়া
স্থিতিকাল :
৪০
হইতে ৬০ দিন। ( ক্রিয়া
ধীরে প্রকাশ পায় তাহার জন্য ঔষধ শীঘ্র পরিবর্ত্তন করিবে না )।
কোন মন্তব্য নেই