এপোসাইনাম ক্যানাবিনাম(Apocynum Canabinum) - এর সম্পর্কে বিস্তারিত ব্লগ
Apocynum Canabinum - এপোসাইনাম ক্যানাবিনাম
এপোসাইনামের প্রাকৃতিক অবস্থা:-
এপোসাইনাসিয়াই ।
এপোসাইনামের প্রতিশব্দ:-
ব্ল্যাকইণ্ডিয়ান
হেম্প , এপোসাইনাম হাইপোরিসিফলিয়াম এ , পিউবিসিস , ডগসূবেন ,
ইণ্ডিয়ান হেম্প , ভারতীয় শন বা পাট ।
উৎস:-
ইণ্ডিয়ান হেম্প নামক গাছড়া হইতে এই ঔষধ
প্রস্তুত হয় ।
বর্ণনা:-
ইহা ফক জাতীয় গাছড়া
। কাণ্ড প্রায় ৪ ফুট পর্যন্ত উঁচু হইয়া থাকে । এই গাছগুলি দুগ্ধবৎ রসে পরিপূর্ণ
থাকে । পাতাগুলি সম্মুখবর্তী এবং বৃন্তযুক্ত
২ হইতে ৩ ইঞ্চি লম্বা । জুন হইতে সেপ্টেম্বর মাসে গাছে সবুজাভ সাদা বর্ণের
ফুল ফুটিয়া থাকে ।
প্রাপ্তিস্থান:-
কানাডা এবং ভারত বর্ষের ঘন বনজঙ্গলের নিকটে, ঝোপ ঝাড়ে এবং বালুকাময় মাটিতে, নদী তীরে ও আর্দ্র
ভূমিতে এই সকল গাছড়া জন্মিয়া থাকে ।
ক্রিয়াস্থান:-
শ্লৈষ্মিক ঝিল্পী এবং
রক্তস্রাবী ঝিল্লীর রস অধিক পরিমাণে ক্ষরিত করে এবং কৌষিক ঝিল্লীর উপর ক্রিয়া
করিয়া শোথ এবং চর্মের উপর ক্রিয়া করিয়া রক্ত স্রাবের সৃষ্টি করে । কিডনী বা
মূত্র গ্রন্থির উপরও ইহার ক্রিয়া আছে । এপোসাইনাম মূত্রধার ও সবল পেশীর দুর্বলতা
জন্মায় এবং হৃৎপিণ্ডের অবসাদ জন্মাইয়া নাড়ীর গতি দুর্বল ও অনিয়মিত করে ।
মানসিক লক্ষণ:-
রোগী উদভ্রান্ত ও
বিষন্ন , বিহ্বল , নিস্তেজতা ভাব ইহাতে বর্তমান থাকে ।
চরিত্রগত লক্ষণ:-
১। উদভ্রান্ত ও বিষন্ন ভাব ।
২। নাসিকার পুরাতন সর্দি , তৎসহ নাক বন্ধ হইয়া যায় ।
৩। খাদ্য অথবা ঠাণ্ডা
জল খাইবা মাত্র বমি হইয়া যায় ।
৪। স্বল্পমূত্র ও ফোলা
ভাব , পর্যায়ক্রমে শোথ ও তরল ভেদ এবং পিপাসা ।
৫। শ্বাস নাতিদীর্ঘ এবং সন্তোষজনক নহে , হৃৎপিণ্ড ও নাড়ীর গতি অনিয়মিত ।
৬। তন্দ্রালুতা ও
শক্তিহীনতা ।
প্রয়োগক্ষেত্র:-
প্রস্রাবের পীড়া , শোথ উদরী , উদরাময় ,
হাইড্রোকেফালস , স্ত্রীপীড়া প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইহা প্রয়োগ হয় ।
শোথ ও উদরীর লক্ষণ:-
যকৃতের ও হৃৎপিণ্ডের
পীড়াজনিত শোথে এই ঔষধ বিশেষ উপযোগী । টাইফয়েড জ্বর হেতু এবং কুইনাইনের অপব্যবহার
জনিত শোথ রোগে এই ঔষধ ভাল কার্যকরী । রক্তস্রাবজনিত শরীর দুর্বল হইলে এবং সেজন্য
শোথ পীড়ায়ও ইহা ব্যবহৃত হয় । এপপাসাইনামের সকল শোথে পিপাসা থাকে । কিন্তু
ঠাণ্ডা জল পান মাত্র বমন ও পেট বেদনা আরম্ভ হয় । এপিসের সহিত ইহার প্রভেদ এই যে , এপপাসাইনমে পিপাসা থাকে ঠাণ্ডায় পীড়ার বৃদ্ধি হয় । অথচ এপিসে পিপাসা
থাকে না এবং গরমে পীড়ার বৃদ্ধি হয় । রক্তস্রাবের ফলে রক্তশূণ্য হইয়া শোথ হইলে
চায়না অপেক্ষা এপপাসাইনাম বেশী উপকারী ।
১ ) কোষ্ঠবদ্ধতাসহ শোথে এপিস।
২ ) উদরাময় ও
শ্বাসকষ্টসহ শোথে এপপাসাইনাম মাদার বা ১x ।
৩ ) সর্বাঙ্গীণ শোথে
আর্সেনিক , অক্সিডেন ;
উপকার না হইলে লিয়াট্রিস মাদার।
৪ ) উদরাময় , অন্ন , বমি , পিপাসাসহ শোথে এসিড এসেটিক ।
প্রস্রাবের পীড়ার:-
মূত্রাশয় প্রসারিত , ঘোলাটে ও উত্তপ্ত প্রস্রাব ,
তৎসহ ঘন শ্লেষ্ম , এবং প্রস্রাবের পর মূত্রনালীতে জ্বলন । প্রস্রাব বাহির করার শক্তি নাই
বলিলেই চলে । ফোঁটা ফোঁটা করিয়া প্রস্রাব নির্গত হয় , স্বল্প প্রস্রাব বা প্রস্রাব বন্ধ , প্রস্রাবে কষ্ট , মূত্রথলির ফোলা রোগগ্রস্ত । রোগগ্রস্ত হইবার ফলে সর্বাঙ্গীন শোথ ।
উদরাময় লক্ষণ:-
পর্যায়ক্রমে শোথ ও
উদরাময় হইলে এপোসাইনাম উপকারী । তরল হরিদ্রা বর্ণের মল অতিশয় জোরে বাহির হইয়া
পড়িলে , প্রত্যেকবার দাস্ত হইবার পর শরীর দুর্বল ও পেট খালি বোধ
হইলে অথবা বায়ু নিঃসরণের সময় মল বাহির হইয়া পড়িলে ইহাতে উপকার পাওয়া যায় ।
মস্তিষ্কেপীড়ার :-
এই পীড়ায় মস্তিষ্কে
জল জমিলে এবং বুকে জল জমিলে এপপাসাইনাম উপকারী । হাইড্রোফেকালসের পরবর্তী এবং শেষ
অবস্থায় অর্থাৎ সম্পূর্ণ অজ্ঞানাবস্থায় এপপাসাইনাম মাদার দ্বারা চিকিৎসা করিলে
মৃত্যুপথযাত্রী রোগীর প্রাণ অনেক সময় রক্ষা পায় ।
স্ত্রীপীড়ার লক্ষণ:-
অবিরাম রক্তস্রাব
কিম্বা অল্পদিন বন্ধ থাকিয়া মাঝে ভীষন রক্তস্রাব হয় , তৎসহ গা বমি বমি , জীবনীশক্তি হ্রাস , উঠিলে মূৰ্ছার ভাব , এবং স্ত্রীলোকদের ঋতুবন্ধের বয়সে অত্যধিক রজঃস্রাব হইলে ইহা উপকারী ।
রজলোপ ও তৎসহ শরীর ফুলিয়া গেলে ইহা উপকারী ।
বৃদ্ধি:-
ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় , শীতল পানীয়ে , অনাবৃত হইলে ।
তুলনীয় ঔষধ:-
এপিস , আর্সেনিক , ডিজিটেলিস ,
হেলিবোরাস ।
। অনেক সুন্দর হয়েছে ধন্যবাদ
উত্তরমুছুন