Baptisia Tinxtoria - ব্যাপটিসিয়া টিংটোরিয়া
ব্যাপটিসিয়া টিংটোরিয়াBaptisia Tinctoria
প্রতিশব্দ:
পোডেলাইরিয়া টিংটোরিয়া
নীলের ঝাঁটা
ব্যাপটিসি
গাছের বর্ণনা:
উহা ২-৩ ফুট উঁচু জংলী
গাছড়া, কান্ড গোলকার, পাতাগুলি ছোট এবং তিনপত্র বিশিষ্ট, ইহা বর্ণ নীল, সবুজ।
উৎস
:
বন্যনীল নামক গাছের মূল
ও ছাল হইতে এই ঔষধ প্রস্তুত হয়।
প্রাপ্তিস্থান :
আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রর
অনেক স্থানে ইহা জম্মিয়া থাকে।
প্রুভার :
ডাঃ থোম্পসন ১৮৫৭ খৃঃ
সর্বপ্রথম প্রুভ করেন।
ক্রিয়াস্থান :
রক্তের উপর উহার ক্রিয়া
প্রকাশ করিয়া থাকে। মস্তিষ্কের উত্তেজনা, দুর্বলতা, মাংসপেশী সমূহে বেদনা, গলমধ্য
ও অন্ত্রের ক্ষত।
ধাতু :
শ্লেম্মা ও রস প্রধান
ধাতুতে এই ঔষধ ক্রিয়া করিয়া থাকে।
মানসিক লক্ষন :
১. রোগী উদাসীন কোন কজে
মন সংযোগ করিতে পারেনা।
২. কোন বিষয়ে চিন্তা
শক্তি লোপ।
৩. মানসিক বিভ্রান্তি,
সে যেন দুইটি দেহ ধারণ করিয়াছে।
৪. রোগী নিজে নিজে এমন
ভাবে কথা বলে থাকে মনে হয় সে অপরের সাথে কথা কলিতেছে।
৫. কেহ বিরক্ত করুক
রোগী তাহা চায়না। মাতাল হওয়ার মত অবস্থা।
চরিত্রগত লক্ষণ :
১. যে কোন তরুন পীড়ার
বাহ্য, প্রস্রাব, ঘর্ম, শ্বাস প্রশ্বাস, ক্ষতস্রাব।
২. টাইফয়েড জ্বরে
প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতেই নিদ্রিত হইয়া পড়ে।
৩. পেট ফাঁপা, কিন্তু
পেট টিপিলে নরম বোধ, পেটের মধ্যে গড় গড় শব্দ।
৪. জিহ্বায় সাদা
প্রলেপ, লাল বর্ন শুষ্ক, ফাটা ও ক্ষতপূর্ণ, দাঁতে ময়লা সঞ্চয়।
৫. মুখ থমথমে ও
লালবর্ণ, যে পাশ ফিরিয়া শোয় সেই পাশেই থেঁতলানো ব্যথা অনুভব।
৬. তরল পানীয় গিলিতে
পারে কিন্তু কঠিন দ্রব্য গিলিতে কষ্ট।
৭. শষ্যাক্ষত।
৮. গলায় ক্ষত কিন্তু
ব্যথা থাকেনা।
৯. বিছানা শক্তবোধ।
১০. প্রায় সর্ব শরীরে
নীল কাল দাগ, সমস্ত শরীরে বেদনা, অস্থিরতা।
রক্তের উপর
ব্যাপটিসিয়ার লক্ষন :
রক্তের উপর ইহার প্রধান
ক্রিয়া ও প্রভাব বিদ্যমান। সুস্থ দেহে ইহা ব্যবহারে রক্তের উপর ক্রিয়া প্রকাশ
করিয়া রক্ত বিকৃতি ঘটাইয়া ইহা টাইয়ফয়েড জ্বরের ন্যায় অবস্থা উৎপন্ন করে। রক্তের
মাধ্যমে ইহা শ্লৈম্মিক ঝিল্লীতে ক্রিয়া প্রকাশ করিয়া মুখ, গলমধ্য ও অন্ত্রের ক্ষত
উৎপন্ন করে এবং গতি ও জ্ঞানের পক্ষাঘাত ও অবসাদ আনায়ন করিয়া থাকে।
টাইফয়েড জ্বর :
টাইফয়েড জ্বর অত্যন্ত
শীঘ্র শীঘ্র বৃদ্ধি হইতে থাকিলে এবং সেই সঙ্গে পেটের দোষ আসিয়া পড়িলে ব্যাপটিসিয়া
প্রয়োগ করা আবশ্যক। ২য় ও ৩য় সাপ্তাহে ব্যপটিসিয়া প্রয়োগকালীন লক্ষনগুলি স্মরণ
করিবেন- সমস্ত শরীরে ভয়ানক বেদনা, তলপেট ফাঁপা কিন্তু নরম, কখনও সমস্ত তলপেটে
বেদনা ও অস্থিরতা, শীতবোধ, কখনো বলে বিছানা বড় শক্ত, শিরঃপীড়া, প্রলাপ বকে, ডাকিলে
সাড়া দেয়, কিন্তু কোন কথা জিজ্ঞাসা করিলে আংশিক উত্তর দিয়া পুনরায় আচ্ছন হইয়া পড়ে।
মটর ডালের ঝোলের মত সবুজবর্ণের মল তাহাতে ফেনা, মল তরল, অত্যন্ত দুর্গন্ধ।
পাকস্থলীর উপর ক্রিয়া :
রোগী শুধুমাত্র তরল
পদার্থ পান করিতে পারে। গলনালীর আক্ষেপ বশতঃ বমন। ক্ষুধাহীনতা, বার বার জল পান
করিতে চায়। পাকাশয়ের উপরের অংশে বেদনা। মনে হয় যেন কিছু আটকাইয়া আছে।
গর্ভপাতের পর
সেপ্টিসিমিয়া রোগে ব্যাপটিসিয়ার লক্ষণ :
গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু
হইয়া যোনিদ্বার দিয়া দুর্গন্ধ স্রাব নিঃসৃত হইলে এসনকি শেষে সেপটিসিমিয়া রোগ
পর্যন্ত হইলে ইহার আভ্যন্তরীণ ব্যবহারে ও বাহ্যিক যথা সময় প্রয়োগে বিপদের ভয়
থাকেনা।
রুগী অত্যান্ত দুর্ভল,
স্রাব অত্যন্ত দুর্গন্ধ, স্বল্প প্রস্রাব, শুইয়া থাকিলে শ্বাসকষ্ট, শ্বাসও
দুর্গন্ধ থাকে।
রক্ত আমাশায় লক্ষণ :
বাহ্যের বেগ ও কুন্থন
অনেক বেশী। বাহ্য ভয়ানক দুগন্ধ ও রক্ত মিশ্রিত। অনবরত বাহ্যর ফলে রোগী কাহিল হইয়া
মরণাপন্ন অবস্থা হয়। অনেক সময় ঘোলাটে ও কাল বর্ণের বাহ্য হইয়া থাকে। পেটে বেদনা
মোটেই থাকে না। ইহার রুগী অতিশয় দুর্বল হইয়া পড়ে।
মুখে ক্ষত :
গলা, দাঁত, মুখ যে কোন
স্থানেই হোক না কেন এমনকি ডিপথিরিয়ার ঘামেও যদি অতিশয় দুগন্ধ থাকে, ক্ষতস্থান ঘোর
লালবর্ণ হয় ও তাহাতে বেদনার লেশমাত্র না থাকে তবে ব্যাপটিসিয়া উপকারী।
জিহ্বা লক্ষনে
জেলস,ব্রায়ো ও রাসটক্সের তুলনা :
ব্যাপটিসিয়া : জিহ্বার মধ্যভাগ কাটা, অগ্রভাগ ও পার্শ্ব লালবর্ণ, ইহাতে কখনও
জিহ্বা প্রথমে সাদা লেপযুক্ত দেখা যায়।
জেলস : জিহ্বার লেপ সামান্য, জিহ্বা কাঁপে।
ব্রায়োনিয়া : জিহ্বাবায় সাদা বর্ণের লেপ, ঠোঁট শুষ্ক, অতিশয় পিপাসা।
রাসটক্স : জিহ্ববার অগ্রভাগ লাল ও ত্রিভূজাকার।
বৃদ্বি : ঘরের ভিতর,ঘুম ভাঙ্গার পর,চলার সময়, ঠান্ডা বাতাসে, শরৎকালে,
মদ্যপানে।
হ্রাস : পার্শ্ব পরিবর্তনে, মুক্ত বায়ুতে, ঘর্ম হইলে।
অনুপুরক : এসিড নাইট্রিক, ক্রোটন, এসিড মিউর, হ্যামামেলিস, টেরিবিন্থ।
ক্রিয়া নাশক : ফাইটোলাক্কা, স্যাঙ্গুনেরিয়া।
ক্রিয়া স্থিতিকাল : ৬ হইত ৮ দিন।
ক্রম : Q, ১x, ২x, ৬, ৩০, ২০০ শক্তি (টাইফয়েডে Q, এবং ১x, শক্তি)
কোন মন্তব্য নেই